ভালোবাসার টানে পাকিস্তান থেকে ৪ সন্তান নিয়ে ভারতের হিন্দু বাড়িতে পা, আদর করে কাছে ডেকে নিল শচীন

উত্তরপ্রদেশের বাড়িতে খুশির পরিবেশ কারণ এসেছে পাকিস্তানি বউ, সঙ্গে ৪ বাচ্চা। বাড়ির লোকের পাশাপাশি পাড়া প্রতিবেশীও পালা করে এসে দেখে যাচ্ছে পাকিস্তানি বউকে। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও ভালবাসার টান যে কি জিনিস তা পুনরায় প্রমাণ করে দেখালো পাকিস্তানে সীমা হায়দার ও উত্তর প্রদেশের শচীন।

সালমান খানের বিখ্যাত সিনেমা ভাইজান আপনারা প্রায় প্রত্যেকেই দেখেছেন। যেখানে সালমান খান ভারতের মাটি থেকে পাকিস্তানের মাটিতে মুন্নীকে পৌঁছে দিয়েছিল। সেটা তো ছিল শুধুমাত্র সিনেমা, কিন্তু বাস্তবে পাকিস্তানের সীমা হায়দার এর ভারতের হিন্দু বাড়ির বউ হয়ে ওঠার কাহিনী আপনার শরীরের রক্ত গরম করে দেবে।

পাকিস্তানের সীমা হায়দার বিবাহিত ও চার বাচ্চার মা। কিভাবে নিলেন এত বড় সিদ্ধান্ত? কোথায় পেলেন এত মনের জোর? কিভাবেই বা এসে পৌঁছালেন উত্তরপ্রদেশের প্রেমিকা শচীনের বাড়িতে? আপনার খুব জানতে ইচ্ছে করছে না, আসুন আমরা একটু একটু করে কাহিনীটি বোঝার চেষ্টা করি।

বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের শচীন সীমা হায়দারের স্বামী, হিন্দু ধর্মের নিয়ম মেনে সীমা হায়দার শিথিতে লাগিয়ে রেখেছেন সিঁদুর। পাকিস্তানে জন্ম চার বাচ্চা এখন শচীনকে বাবা বলে ডাকে।

ঘটনার সূত্রপাত আজ থেকে চার বছর আগে উত্তরপ্রদেশের শচীন ভিডিও গেম খেলতে খেলতে বন্ধুত্ব করেন পাকিস্তানের সীমা হায়দার এর সঙ্গে। এরপর দুজনেই মোবাইল নাম্বার শেয়ার করেন, আস্তে আস্তে কথা বলা শুরু করেন, কথা বলতে বলতে শচীন জানতে পারেন সীমা হায়দার খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছেন, এবং তিনি চার বাচ্চার মা। মানসিক ও শারীরিকভাবে স্বামী তাকে নির্যাতন করেন, আর গত বেশ কয়েক বছর স্বামী রয়েছে বিদেশে। এক কথায় দুজনের বিবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এইভাবে মোবাইলে কথা হতে হতে এক সময় তারা বুঝতে পারেন উভয় উভয়ের প্রেমে পড়েছেন। কিন্তু এই প্রেম তো আর যেমন তেমন প্রেম নয়, প্রেমিকের বাড়ি ভারতবর্ষের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে আর প্রেমিকার বাড়ি পাকিস্তান। যাদের সাথে সাপে নেউলের সম্পর্ক।

কি করবেন না করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না কিন্তু প্রেম ধীরে ধীরে গাড়ো থেকে গাড়তর হচ্ছে। আর গত কয়েক মাস আগে দুজনেই সিদ্ধান্ত নেন যে তারা দেখা করবেন। সেই কথামতো তারা নেপালের কাঠমান্ডু এয়ারপোর্টে দেখা করেন এবং বেশ কিছুদিন একসাথে থাকেন। এই সময়ই এক মন্দিরে শচীন পাকিস্তানের সীমা হায়দার কে বিয়ে করেন।

এরপরই শুরু হয় দুজনের পরিকল্পনা কিভাবে সীমা পাকাপাকিভাবে তার চার সন্তানকে নিয়ে ভারতে আসবে। এবং এই ঘটনা আগে থেকেই শচীন তার বাড়িতে জানিয়ে রেখেছিল। বাড়ির লোক ছেলের অন্যায় আবদারে রাজিও হয়েছিল। কিন্তু কোথাও না কোথাও বাড়ির লোকের সন্দেহ ছিল যে হয়তো বা শচীন কোন ঠগের পাল্লায় পড়েছে।

ওদিকে পাকিস্তানে সীমা হায়দার বর্ডার পার করানোর জন্য বিভিন্ন এজেন্সির সাথে কথা বলে এবং খরচ হিসেব করতে শুরু করে। পাকিস্তানি টাকায় কম করেও ১২ লাখ টাকা খরচ করে শেষমেষ সীমা হায়দার এসে পৌঁছায় শচীনের বাড়িতে। উত্তর প্রদেশ পুলিশ সিনেমা হায়দার কে গ্রেফতার করলেও কয়েকদিন পর কোর্ট থেকে সীমাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এখন সীমা, শচীনের স্ত্রী হয়ে উত্তরপ্রদেশের বাড়িতে রয়েছে। শচীনের বাড়ির লোকের পাশাপাশি পাড়া-প্রতিবেশীরাও এই অবাক কাণ্ডে খুব খুশি, এবং প্রত্যেকেই সীমাকে ভালোবেসে নিজের করে নিয়েছে। নিউজ মিডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায় যে সীমা আর কখনোই পাকিস্তানের ফিরে যেতে চায় না সে সারা জীবন শচীনের সাথে এখানে কাটিয়ে দিতে চায়, কিন্তু দেখার বিষয় হলো আগামী দিনে রাজনৈতিক ভাবে কোন সমস্যা বেরিয়ে না পড়ে।

ভালোবাসার এই কাহিনী আপনাদের কেমন লাগলো নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন নিজের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের শেয়ার করতে পারেন।

Leave a Comment